আজ ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুরবানির গোশতে বিয়ের মেহমানদারী করা যাবে কি?


ধর্ম ডেস্ক

কুরবানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তা শুধু মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের নিয়তেই আদায় করতে হয়। এর ব্যতিক্রম হলেই কুরবানি হবে না। কিন্তু সমাজে অহরহ বলতে কিংবা ঘটতে দেয়া যায় যে, কুরবানি পরবর্তী ২/৩ দিনের মধ্যে বিয়েসহ অনেক বড় বড় অনুষ্ঠান উদযাপতি হয়। তাতে কুরবানির গোশতও খাবার হিসেবে পরিবেশন করা হয়। আবার অনেককে বলতে শোনা যায়, এবার গরু বড় দেখে কিনতে হবে। কুরবানির পর অনুষ্ঠান আছে।

জানার বিষয় হলো- কুরবানির গোশ্ত দিয়ে বিয়েসহ মুসলমানদের যে কোনো বড় অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো কি জায়েয হবে এবং এ উদ্দেশ্যে কুরবানি দিলে কি তা বৈধ হবে? কুরবানি শুধু মহান আল্লাহর জন্য। তবে কুরবানির পর এ গোশত দিয়ে যে কোনো হালাল অনুষ্ঠানে আগত দাওয়াতি মেহমানকে খাওয়ানো যাবে। তাতে কুরবানির কোনো ক্ষতি হবে না। তবে শর্ত হলো- অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্দেশ্যে কুরবানি করা যাবে না। কারণ কুরবানি দিতে মহান আল্লাহর জন্য। কুরবানির উদ্দেশ্য ছাড়া বিয়ে কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্দেশ্যে কুরবানি দিলে তা বৈধ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘এগুলোর (কুরবানির পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।’ (সুরা হজ : আয়াত ৩৭)

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কুরবানি করা পশুর গোশত যেমন নিজে খেতে পারবে। তেমনি অন্যকে দাওয়াত করেও খাওয়ানো যাবে। বিয়ে কিংবা যে কোনো বৈধ অনুষ্ঠানে এ গোশত দ্বারা খাবার পরিবেশন করাতেও কোনো বাঁধা নেই। তবে অনুষ্ঠানের নিয়তে কুরবানি করলে তা বৈধ হবে না। কেননা কুরবানি শুধুই আল্লাহর জন্য। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম মিনায় এসে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আবেগ ও ভালোবাসায় নিজ প্রাণপ্রিয় সন্তান হজরত ইসলামইল আলাইহিস সালামকে কুরবানির কার্যক্রম করেছিলেন। এ কুরবানির নিয়ত ও চুক্তি হলো এমন- ’নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কুরবানি, আমার জীবন, আমার মৃত্যু মহান আল্লাহর জন্য। যিনি সমগ্র সৃষ্টি জগতের প্রতিপালক। তাঁর কোনো শরিক নেই।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৬২)

মনে রাখতে হবে: কুরবানির গোশত দিয়ে মুমিন মুসলমান বিয়েসহ যে কোনো বৈধ অনুষ্ঠানই উদযাপন করতে পারবেন। কিন্তু এ উদ্দেশ্যে কুরবানি দেয়া যাবে না। কুরবানির উদ্দেশ্য থাকবে শুধু মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে তার সন্তুষ্টির নিয়তে তা সম্পন্ন করার তাওফিক দান করুন। কুরবানির যথাযথ হক আদায় করার তাওফিক দান করুন। গরিব-অসহায়দের মাঝে কুরবানির গোশত দান করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর